ফরিদপুরের প্রতিভাবান ভাস্কর মোঃ বাহারুল লতিফ এর গল্প

Page Visited: 1171
99 Views

আজ আপনাদেরকে ফরিদপুরের একজন অন্যতম প্রতিভাবান ব্যাক্তির সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো। আমাদের ফরিদপুরে এমন একজন গুনি শিল্পী রয়েছেন বর্তমান প্রজন্মকে এই গুনি ব্যাক্তির সম্পর্কে  জানাতেই আজকের এই প্রতিবেদন।

তিনি জনাব মোঃ বাহারুল লতিফ তিনি আমাদের কাছে একজন প্রতিভাবান ভাস্কর্য শিল্পী । তার ভাস্কর্য শিল্পকর্ম বাংলাদেশের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে প্রচারিত হয়েছিলো। ফরিদপুর শহরের গুহ্ লক্ষীপুরে তার জন্ম এবং সেখানেই তার বাসস্থান । ১০ ভাইবোনের মধ্যে তিনি তার মা বাবার ৪র্থ সন্তান, ছোট বেলা থেকেই তিনি আকা আকি করতেন তিনি ২০০৫ সাল থেকেই কাঠের ওপর খোদাই করে তৈরী করেছেন অসংখ্য শিল্পকর্ম । তার এই শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘরে  সেই শিল্পকর্মে রয়েছে ১৯টি দেশী প্রজাতীর প্রাণী। শিল্পকর্মটিতে যদিও তার নাম লেখা নেই শুধু লেখা আছে ফরিদপুরের শিল্পকর্ম। বাহারুল লতিফ জানান যেহেতু আমি শিল্পকর্মটির জন্য সম্মানী গ্রহন করেছি তাই উক্ত শিল্পকর্মে আমার নাম উল্লেখ করা হয়নি। তিনি খুবই আনন্দ লাভ করেন যখন কেউ তাকে বলে আপনার শিল্পকর্মটি জাতীয় যাদুঘরে দেখে এলাম । শিল্পকর্মটি তার দেয়া তথ্য মতে জাতীয় যাদুঘরের ৩য় তলায় রয়েছে। তিনি আরও বলেন হয়তো আমি থাকবো না তবে আমার শিল্পকর্মটি থেকে যাবে আমার সন্তান এবং ভবিষ্যত প্রজন্ম দেখতে পাবে শিল্পকর্মটি এটা ভেবে ভীষন ভালো লাগে তার। বগুরা জেলা শীবগঞ্জ যাদুঘরেও তার শিল্পকর্ম রয়েছে বলে জানান। তিনি ১৯৮০ সালে শিশু চিত্রকর্মে জাতীয় শিশু একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন।২০০৮  সালে ফরিদপুর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা তার শিল্পকর্ম নিয়ে একটি প্রদর্শন করে যা ২৯ ডিসেম্বর ডেইলি স্টার পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছিলো ।  ২০১৫সালে তিনি ফরিদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমী সম্মাননা পান। ২০১৬ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসীনার হাতে তুলে দেন গাছের শিকর দিয়ে তৈরী স্পার্ক ৭১ নামের মুক্তিযুদ্ধের একটি ভাস্কর্য তিনি বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যাক্তির শিল্পকর্ম তৈরী করেছেন তারমধ্যে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান,জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম,কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,মাইকেল মধুসুদন দত্ত,পল্লীকবি জসীম উদ্‌দীন,মাদার তেরেসা,বাউল সম্রাট শাহ্‌ আব্দুল করিম,কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ, নেলসন মেন্ডলসহ আরও অনেক গুনী ব্যাক্তির পট্রেইট বানিয়েছেন তিনি।

তার শিল্পকর্মে তিনি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে ‍তুলেছেন দেখা যায় তার শিল্পকর্মে একাত্তরের গণহত্যা রায়ের বাজার বধ্যভূমীর গনহত্যার চিত্র, প্রাকৃতিক দুর্যোগে কলা গাছের ভেলায় পারাপারের দৃশ্য ,আমাদের দেশের ৭ জন শহীদ বীর শ্রেষ্ঠ, অত্যাচারীত শ্রমীকের আর্তনাদ, ইত্যাদি।

তার কাজের বৈশিষ্ট হচ্ছে তিনি তার কাঠের শিল্পকর্মে একটি কাঠের উপরেই চিত্রকর্ম করেন একটি কাঠের সাথে অন্য কাঠ জোড়া দিয়ে কাজ করেন না এটা তার কাজের বৈশিষ্ট। তিনি বলেন তিনি তার কাজের জন্য কোনও প্রশিক্ষন গ্রহন করেননি ,এখন তিনি আগের মতো শিল্পকর্ম তৈরী করেন না । তিনি  বলেন আগে যখন কাজ করেছি তখন হাতুর বাটাল দিয়েই কাজ করেছি অনেক সময় লেগেছে অনেক ধৈর্য্য নিয়ে কাজ করেছি, কিন্তু এখন অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরী হয়েছে আগে যে কাজটি করতে ৩ থেকে ৪ মাস সময় লেগেছে সেখানে এই আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে হয়তো ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করা যেতো । 

জনাব বাহারুল লতিফের জন্য অনেক শুভকামনা রইলো সত্যি তিনি আমাদের ফরিদপুরের একজন প্রতিভাবান ব্যাক্তি হিসেবে নিজেকে সফলভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন। তার মতো প্রতিভাবান ব্যাক্তিদের প্রতি আমরা সম্মান জানাই  তার দীর্ঘায়ু কামনা করছি । ফরিদপুরের এমন প্রতিভাবান ব্যাক্তিদেরকে আমরা সবসময়ই তুলে ধরার চেষ্টা করি আপনাদের জানামতে যদি এমন কেউ থেকে থাকে যাকে আপনার কাছে প্রতিভাবান ব্যাক্তি মনে হয় আমাদের ফেসবুক পেইজে অথবা ইমেইল করে জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *