কেমন ছিলো নব্বই দশকের ঈদ প্রস্তুতি ফরিদপুরের কিশোরদের

Page Visited: 188
128 Views

যুগে যুগে পরিবর্তন আসবে এটাই স্বাভাবিক যুগ পরিবর্তন এর সাথে সাথে মানুষের রুচি সংস্কৃতি ঐতিহ্যেরও পরিবর্তন ঘটে। বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন সামাজিক ধর্মীয় উৎসব এলে আনন্দে মেতে উঠে ছোট বড় সকলেই।

এখন বিংশ শতাব্দি চলছে মানুষের রুচির ব্যাপক পরিবর্তন হলেও তবুও শৈশবের স্মৃতি কিন্তু কেউ ভুলে যায় না অনেকেই তার শৈশবে ফিরে যেতে চায় যদিও সেটা সম্ভব না। তবে শৈশবের স্মৃতিচারণ করাই যায় কেমন ছিলো ৯০ দশকে ফরিদপুরের  ‍কিশোরদের ঈদ প্রস্তুতি তার কিছুটা তুলে ধরা হলো।

অনেকেই ঈদের আগে ফরিদপুর সদর উপজেলার মমিন খাঁর  হাট থেকে ২০/ ২৫ টাকায় ১শো শোলতে বাজি পাওয়া যেতো। অনেকেই সাইকেল চালিয়ে সেই বাজি কিনতে যেতো। বাজি কিনে রোদ্দুরে গরম করতো অনেকে যেনো বাজিটা অনেক বিকট শব্দ হয়,তখনকার সময় ইলেক্ট্রনিক্স এর দোকানে নতুন টিভির এন্টেনা কেনার ব্যস্ততা দেখো যেতো সেই সাথে পুরাতন এন্টিনার বাশ পরিবর্তন করতে দেখা যেতো। একটা মাত্র টিভি চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশন ঈদের বিভিন্ন বিনোদনমুলক অনুষ্ঠান যেনো মিস না হয় তারই প্রস্তুতি থাকতো। নতুন গানের ক্যাসেট কেনা জন্য অডিওর দোকানে ভির দেখা যেতো,হিন্দী বাংলা গানের ক্যাসেট কিনতো সবাই অনেকে ডেক সেট (সাউন্ড বক্স) ভাড়া করে স্টলে নিয়ে বাজাতো, মধ্যবিত্ত অল্প সংখ্যক বাড়িতে  ভিসিআর সেট ছিলো যার মাধ্যমে মুভি দেখা যেতো। অনেকে নিজেদের বাসায় গান শোনার জন্য ক্যাসেট প্লেয়ার  সার্ভিসিং করতো মেকানিকের দোকানে।  তখন ভিসিআর এর দেখার জন্য ক্যাসেট, গীতমালা ভাড়া পাওয়া যেতো, তখনকার ছেলেমেয়েরা পাড়া মহল্লার গাছ থেকে মেহেদী পাতা ছিড়ে পাটায় বেটে হাতে দিতো, সেই মেহেদী সারারাত রেখে দিতো হাতে  যত বেশি সময় রাখা যাবে তত বেশিই লাল হবে।
খুব ভোরে উঠতো ছেলেমেয়েরা, ছেলেরা ঈদের নামাজ শেষে নতুন জামাকাপড় পড়ত তবে অনেকে নতুন জামাকপড় থেকে স্টিকার তুলতে চাইতো না পুরেনো হয়ে যাবে বলে।সকালে খাওয়া দাওয়া করে সালামি উঠাতে বেরিয়ে পরতো আত্মীয়স্বজনদের বাসায় । যাদের সাইকেল কেনার সামর্থ  ছিলোনা তারা ৬টাকা ঘন্টা হিসেবে সাইকেল ভাড়া করে পাংখা হয়ে ঘুরে বেরাতো, লাক্সারি হোটেলের পাশে ভিডিও গেমস খেলতে দেখা যেতো  ঐদিন সব মাফ কিচ্ছু বলতো  না বাসা থেকে দেখলে।
ছোট বড় সকলেই অপেক্ষায় থাকতো ঈদ উপলক্ষে কি সিনেমা এসেছে  বনলতা সিনেমা হলে অথবা ছায়াবানি সিনেমা হলে । সিনেমাকে সবাই বই (সিনেমা) বলতো। তখন সবার হাতে ক্যামেরা ছিলো না আত্মীয়স্বজন মিলে একসাথে টেপাখোলার উজ্জল স্টুডিও অথবা গোয়ালচামট এলাকার সকাল সন্ধ্যা স্টুডিও থেকে ফটো বা ছবি তুলতো স্মৃতি ধরে রাখার জন্য। ফরিদপুরে তখন বিনোদন কেন্দ্র ছিলো না বললেই চলে একমাত্র দর্শনীয় স্থান নদী গবেষণায় ভীড় করতো অনেকে, সারাদিন শেষে ঘুরে রাতে বিটিভিতে বিনোদনমুলক অনুষ্ঠান ইত্যাদি মিস করতো না কেউ ।
এমন পরিকল্পনা শুধু ৯০ দশকের ভাগ্যবানরাই বুঝবে। ফরিদপুরকে দেখুন,ফরিদপুরকে জানুন।
আপনাদের রঙিন স্মৃতি থাকলে কমেন্ট করুন।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *