রাজেন্দ্র কলেজের প্রাক্তন শীক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান ঝান্ডার গবেষণা ও স্মৃতিচারণ

Page Visited: 1248
140 Views

 দক্ষিণ বঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঐতিহ্যবাহী কলেজ ফরিদপুর সরকারী রাজেন্দ্র কলেজে ১৯৭৬-৭৭ শিক্ষা বর্ষে এইচএসসি একাদশ শ্রেণির মানবিক শাখার ছাত্র ছিলাম। সবেমাত্র স্কুল পেরিয়ে কলেজে পা দিয়েছি, সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশ। রাজেন্দ্র কলেজে পড়ার স্বপ্ন পূরণ হলো। ঐ সময় সহপাঠি বন্ধুদের মধ্যে যথেষ্ট আন্তরিকতা ছিল। সাইন্স, আর্টস, কমার্স-এর শিক্ষার্থী সকলের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাব ছিল। আমার একটি রাশিয়ান বাইসাইকেল ছিল, ওটা নিয়ে কলেজে যেতাম। রোজ পোশাক পরিবর্তন করতাম। আমরা ৪ ভাই, ৩ বোন ওআমার কন্যা মেহরুবা এশা রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী ছিলাম। পুত্র তাশফিকুর রহমান মেহরাব রাজেন্দ্র কলেজে অধ্যয়নরত।মেঝ ভাই আতিকুর রহমান ছিলেন-তৎকালীন ষাট এর দশকে ছাত্র সংসদের নাট্য সম্পাদক, সহপাঠি ছিলেন মাজেদুর রহমান ভিপি, শরীফ মোঃ আফজাল হোসেন ভিপি, বিশিষ্ট সাহিত্যিক, গবেষক, অধ্যাপক আনম আব্দুস সোবহান, বদিউজ্জামান চৌধুরী ভাদু-প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, ফরিদপুর প্রেসক্লাব, তাবিবুর রশিদ চৌধুরী তাবু (শিল্পপতি)।

আরেক ভাইসিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক- তার সহপাঠি ছিলেন- জহুরুলইসলাম জহুর, আকতার হোসেন খান সাবেক সচিব, সরোয়ার উদ্দীন সাবেক অতিরিক্ত সচিব, বাটা সু কোম্পানি কান্ট্রি ম্যানেজার কে এম শহিদুল আলম খোকন, মোহাম্মদ আলী আখন্দ সাবেক ডিসি, অধ্যাপক এম এ সামাদ তৎকালিন সংসদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক ছিলেন- বর্তমান সম্পাদক ফরিদপুর মুসলিম মিশন, লোকমান হোসেন মৃধা- চেয়ারম্যান জেলা পরিষদ ফরিদপুর। সিদ্দিকুর রহমান পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মহসিন হল শাখার ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। আরেক ভাই এস্রাজুর রহমান ঠান্ডু- এর সহপাঠিদের মধ্যে ছিলেন তৎকালিন ছাত্র সংসদের ভিপি শাহ্ মোঃ আবু জাফর, কবিরুল ইসলাম মাও, নাসির উদ্দীন আহমেদ মুসা ও মোহাম্মদ আলী বুলবুল। ঠান্ডু পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয় জোহা হল শাখার ছাত্রলীগের জিএস ছিলেন। মেঝ বোন শাহ্তাজ বেগম মায়া- এর সহপাঠি ছিলেন, এ্যামিলি দি, ছবি আপা, বড় খায়ের দিয়ার ওলি ভাইয়ের বোন শাহিদা আপা, মুস্তারিআপা, মরিয়ম আপা।মাহ্বুবা বেগম মুক্তা- এর সহপাঠি ছিলেন- গোপালগঞ্জের রেঞ্জু আপা, মঞ্জু আপা, জাহিদ। মুক্তা পরবর্তীতে ঢাকা ইডেন কলেজে অধ্যয়ন করেন।

আরেক বোন হাবিবা বেগম পান্না- তার সহপাঠি ছিল তৎকালিন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ এজহারুল হক এর মেয়ে ডলি আপা, বোনের বান্ধবী সে সুবাদে তাদের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। ওর আরেক সহপাঠি বান্ধবিকমলাপুরের ঐতিহাসিক বাড়িময়েজ মঞ্জিলের নাভিদ আপা তিনি ভাল টেবিল টেনিস খেলতেন। মিলি আপা ঝিলটুলী- বিটিভি’র সংবাদ পাঠক সালেহ্ আকরাম এর বোন, মিনি আপা ঝিলটুলি (DACO-এর মেয়ে), সুফিয়া আপা লক্ষীপুর-মুক্তিযোদ্ধা হামিদুলের বোন, ফুলু আপা আলীপুর, লিলি আপা (ফয়েজ দারোগার মেয়ে), পান্না পরবর্তীতে ঢাকায় মাস্টার্স এবং এম.এড ডিগ্রি অর্জন করেন।আমার সহপাঠি বন্ধুদের মধ্যে ছিল-রংপুরের লেলিন চৌধুরী, মোঃ শামসুল হকলক্ষ্মীপুর-ডিজিএম সোনালী ব্যাংক, জিন্নাতুর রহমান ভিন্টু লক্ষ্মীপুর, রায়হান টুটুল লক্ষীপুর ব্যাংকার,শরফুদ্দিন লাবু ওয়ারলেস পাড়া- পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর বড় পদে কর্মরত ছিলেন, দিপক দাস গুপ্ত ঝিলটুলী ব্যাংকার, লিয়াকত আলী আখন্দ বাকা ঝিলটুলি,হাজী মোসলেম মুসা ধুলদী, ডিসি অফিস মাগুরা, হাজী মোঃ আইয়ুব খান ব্যবসায়ী ঝিলটুলী,কাজী মামুন ঝিলটুলী ব্যবসায়ী সমাজসেবক, এ্যাড: বশির আহ্মেদ চৌধুরী গোয়ালচামট, এ্যাড: লুৎফর রহমান পিলু পশ্চিম খাবাসপুর, জোনায়েদ বাবু চরকমলাপুর, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুলবারী জনু ঝিলটুলী, ইঞ্জিনিয়ারমারজান টেপাখোলা, ইঞ্জিনিয়ার কাওসারচরকমলাপুর, ডা: এস.এম. খবীরুল ইসলাম টেপাখোলা- অধ্যক্ষ ফমেক,ডা: আমান বাবলা পূর্ব খাবাসপুর- ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইউরোলজি বিভাগ প্রধান, মতিয়ার রহমান অধ্যক্ষ বঙ্গবন্ধু কলেজ গোপালগঞ্জ, আলহাজ্ব এম.এ. আউয়াল বাবুল পূর্বখাবাসপুর-ম্যানেজিং ডিরেক্টর ন্যাশনাল টি কোম্পানি ঢাকা, মোঃ আঃ মান্নান এডিশনাল সেক্রেটারী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ পুলিশ বিভাগের এসি চকবাজার জোন ঢাকা, মুকুল টেকেরহাট (আমেরিকা), মোহাম্মদ আলী ঝিলটুলী (আমেরিকা) প্রমুখ।আমাদের শ্রেণিতে কোন মেয়ে শিক্ষার্থী ছিলনা। সাইন্সের ৪ জন ছাত্রী বাংলা ও ইংরেজী ক্লাস করত আমাদের সঙ্গে একত্রে।

সে সময়ের ছাত্র নেতৃবৃন্দের মাঝে বক্তব্য রাখতেন কলেজের ঐতিহাসিক আমতলায় তৎকালীন ছাত্রছাত্রী সংসদের এমএম শাহ্রিয়ার রুমি ভিপি, মোঃ হায়দার আলী জিএস, সামসুদ্দিন মোল্লা ভিপি, মো: ইকবাল হোসেন খান ভিপি, মনিরুল হাসান মিঠু ভিপি, মিজানুল ইসলাম মিজু জিএস, মো: ফারুক হোসেন, কাজী গোলাম মোক্তাদির রিপন, লিয়াকত হোসেন, সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা, এ্যাড: আকন্দ মো: নজরুল, মোক্তার রহমান শরীফ, কাজী নজরুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মনির, আলতাফ হোসেন, মজিবর রহমান, আযাদ আবুল কালাম, সাইদুর রহিম বিটুল, নুরুল হাসান আবিদ।অন্যান্যদের মধ্যে আব্দুর রহমান, শহিদুল ইসলাম নিরু, একে আজাদ কর্ণধার হামিম গ্রুপ, আবু দায়েন মোঃ কাজল প্রমুখ। সিনিয়রদের মধ্যে- ছাত্র ও যুব নেতা জাহিদুর রহমান জাহিদ, সাঈদ খাঁন, সমীর বোস, বিপুল ঘোষ, কমরেড আতিয়ার প্রমুখ।তখন রাজনীতি ছিল কলেজ কেন্দ্রিক ছাত্রদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ছাত্ররা ছিলো ন্যায়-নিষ্ঠাবান, আদর্শের প্রতীক রাজপথের যে কোন আন্দোলনের সৈনিক।
কলেজে “রোভার স্কাউট”-এ যোগ দেই। রোভার নেতা আবু হোসেন স্যারের নেতৃত্বে ঢাকার বাহাদুরপুর রোভার পল্লীতে ২য় জাতীয় রোভার মুট ক্যাম্পে অংশ গ্রহন করি। কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এবং বিভিন্ন সময়ে জাতীয় নেতৃবৃন্দ এ কলেজে বক্তৃতা করেছেন- এদের মধ্যে ঃ কেএম ওবায়দুর রহমান, আসম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, বাহালুল মজনুন চুন্নু, শফিউল আলম প্রধান প্রমুখ। সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং নেতৃবৃন্দ জড়ো হতো মুল ভবনের দক্ষিণে আম গাছের নিচে আমতলায়। এর পাশেই ছিল রাখাল চন্দ্র ঘোষ এর- দাদার ক্যান্টিন নামে পরিচিত ক্যান্টিন। এখানে সিঙ্গারা, পুড়ি, সন্দেশ, চা পাওয়া যেত দাম ছিল ৫০ পয়সা। ক্লাসের অবসরে দাদার ক্যান্টিনে চায়ের আড্ডা কাপে ধোঁয়া সহ বিভিন্ন প্রকার আলাপ আলোচনা, রাজনৈতিক কথাবার্তা এবং চুটিয়ে আড্ডা দেয়া। ক্লাসের অফ-পিরিয়ডে কলেজ লাইব্রেরীতে ক্লাসের বই পড়তাম। সংগীতের প্রতি একটু নেশার কারণে মাঝে মধ্যে মনের আনন্দে ক্লাসরুমে/দাদার ক্যান্টিনে বসে লাকী আখন্দ এবং কিশোর কুমার এর গান গাইতাম। সে সময়ে কলেজের পুরাতন মূল ভবনের নিচে শিক্ষার্থীদের ক্লাস হতো। উপরতলায় অফিস, অধ্যক্ষের রুম, মেয়েদের কমন রুম-এর ভেতরে ইনডোর গেমস হতো, বিশেষ আকর্ষণ ছিল টেবিল টেনিস খেলা। এর পাশে বারান্দা সংলগ্ন রুমে ছিল লাইব্রেরী। মূল গেট দিয়ে প্রবেশ করে বর্তমান শহীদ মিনারের পাশে লম্বা ঘর ছেলেদের কমন রুম ছিল এখানে ইনডোর গেমস খেলা হতো।৯/১১ নং রুম ছিল গ্যালারি বড় রুম এখানে ক্লাস হতো। ছাত্রী হোস্টেল, অধ্যক্ষের বাস ভবন ক্যাম্পাসে ছিল না। ছাত্রাবাস ভাঙ্গা কনডেম বিল্ডিং টিনের চালা এবং জীর্ণশীর্ন একটি পুরাতন ভবন ছিল। ছোট সাধারণ শহীদ মিনার ছিল। টিচার্স ক্লাব ছিল না, ছাত্র-ছাত্রী সংসদের রুকসু ভবন ছিলনা,মসজিদ-মন্দির ছিল না, প্রশাসনিক ভবন ছিলনা, বায়তুল আমান ক্যাম্পাস ছিল না। কলেজ হোস্টেলের মাঠ পেরোলেই দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ছিল- এখনও আছে বিশিষ্ট সমাজ সেবক, সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদ এর সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার নুরুল হোসেন নুরু মিয়ার ঐতিহ্যবাহী বাড়ি হাসিনা মঞ্জিল। এই বাড়ির মেয়ে ওয়াহিদা ঐ সময়ে সু-মধুর রবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চা করতেন। এ বাড়ীর সামনে তরুণ-যুবকরা তার গান শোনার জন্য ভিড় জমাতো। তাদের মধ্যে আমিও একজন।

কলেজের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দঃ- সে সময়ে কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন- গোলাম রসুল স্যার, পরবর্তীতে সিদ্দিকুর রহমান স্যার। বাংলা পড়াতেন- জিএম হালিম স্যার, শেখ সমশের আলী স্যার, আব্দুল মজিদ তালুকদার স্যার, আনিসুর রহমান স্যার, নূর জাহান ম্যাডাম। ইংরেজী পড়াতেন- নুরুল হক স্যার বিভাগীয় প্রধান, সাত্তার স্যার, হরিদাস সাহা স্যার, ফরহাদ স্যার। অর্থনীতি পড়াতেন- অপূর্ব কৃষ্ণ ঘোষ স্যার বিভাগীয় প্রধান, এএসএফ ফেরদৌস স্যার, হাবিবুল্লাহ বাহার স্যার, আফতাবউদ্দীন স্যার। সমাজবিজ্ঞান পড়াতেন- মোঃ নজরুল ইসলাম স্যার এবং আরেক জন ম্যাডাম। সমাজকল্যাণ পড়াতেন- খন্দকার নুরুল ইসলাম স্যার, আলতাফ হোসেন স্যার।যুক্তিবিদ্যা/দর্শণ পড়াতেন- হাশেম স্যার। ভূগোল পড়াতেন- মৈমুর রহমান স্যার, মোঃ আবু হোসেন স্যার, মমতাজ ম্যাডাম, ডেমনেষ্ট্রেটর ছিলেন বিমল চন্দ্র দাস, ম্যাসেঞ্জার শংকর। একাউন্টিং বিভাগের প্রধান ছিলেন মিঞা লুৎফার রহমান স্যার, জিতেন্দ্র দেবনাথ স্যার।

পদার্থ বিজ্ঞানের- এহিয়া ইসলাম স্যার বিভাগীয় প্রধান, খায়রুজ্জামান স্যার, গোলাম সোবহানি রানা স্যার, আমজাদ হোসেন স্যার, ডেমনেষ্ট্রেটর ছিলেন মোঃ ইউনুছ মিয়া।রসায়ন বিভাগে ছিলেন- তালেব আলী স্যার, এএন এম ওয়াহিদুজ্জামান স্যার, আমির উদ্দীন স্যার ও ফখরুজ্জামান স্যার।গণিত বিভাগে ছিলেন- অনিল কৃষ্ণ ঘোষ স্যার, সুভাষ চন্দ্র ঘোষ স্যার, শাহাদাৎ হোসেন স্যার। সফিউজ্জামান স্যার উদ্ভিদবিদ্যা, নূর জাহান ম্যাডাম প্রাণীবিদ্যা (এরা দু’জন স্বামী-স্ত্রী ছিলেন) নূর জাহান আপাকে ছাত্ররা নায়িকা ববিতা ম্যাডাম বলতেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াতেন- হেদায়েত কবির স্যার, মঈনউদ্দীন স্যার, হান্নান স্যার, ইসলামের ইতিহাস বিভাগে ছিলেন- এ.এম. মুজিবুর রহমান, সাধারণ ইতিহাস বিভাগে ছিলেন- আবুল কালাম আজাদ ।সে সময়ে প্রধান সহকারী ছিলেন- মোজাফ্ফর হোসেন, ক্যাশিয়ার ছিলেন- আব্দুর রশিদ সেক,একাউন্টেন্ট ছিলেন- আওসাদ খান আসাদ, অফিস সহকারী- মফিজ উদ্দিন, মীর আব্দুর রব, শহিদুর রহমান, লাইব্রেরীয়ান ছিলেন- মকদুম হোসেন, আবু সাঈদ খান। দবিরুদ্দিন পিওন/ল্যাবরেটরী সহকারী, আব্দুস সালাম ব্যাপারী পিওন, নুরুদ্দীন খান পিওন, নাইট গার্ড আলতাফ হোসেন ও আব্দুল করিম সেক। উল্লেখ থাকে যে, পদার্থ বিজ্ঞানের গোলাম সোবহানী রানা স্যার অনুসন্ধানী ক্লাব করেছিলেন। গণিতের সাহাদাৎ হোসেন স্যার ছিলেন খেলাঘর সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক। এই শিক্ষকদ্বয় ঐ সময় রাজেন্দ্র কলেজে বিজ্ঞান মেলা চালু করেছিলেন।রাষ্ট্র বিজ্ঞানের মঈনদ্দিন স্যার ও হান্নান স্যার দুজনে ঐ সময় আমাদের বাসায় ভাড়া থাকতেন। হান্নান স্যার পরবর্তীতে ফরিদপুর ঝিলটুলী নিবাসী জনৈক দারোগা সাহেবের মেয়ে মঞ্জু আপাকে বিয়ে করেন, তিনি বিশিষ্ট সংস্কৃতি ও নাট্য ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর এর খালাতো ভাই।১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে আমি বিএ (পাস) শ্রেণির ছাত্র। ছাত্র-ছাত্রী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা, মিছিল মিটিং, দু গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এক পর্যায়ে মারামারি- আমরা কলেজে শক্ত অবস্থান নিলাম অপর পক্ষ দৌড়ে পালালো। যাহোক, সেসময়ে কলেজে পড়ালেখা হতো, শিক্ষার্থীরা মন দিয়ে পড়াশুনা করত, শিক্ষকদের ছাত্ররা যথেষ্ট ভক্তি শ্রদ্ধা করত। সেই দিনগুলি আর কখনও ফিরে আসবে না। সেই শিক্ষক এবং সহপাঠিদের আর কলেজে পাবো না এটাই বাস্তবতা। রাজেন্দ্র কলেজে পড়তে পারায় নিজেকে ধন্য এবং গর্ববোধ করি। অনেকের নাম এবং অনেক স্মৃতি লিখতে না পারায় আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমা প্রার্থী। কোন প্রতিষ্ঠানের শতবর্ষ পূর্তি দেখা উপভোগ করা সৌভাগ্যের ব্যাপার। সৃষ্টি কর্তার অসীম কৃপা না থাকলে তা হয় না। গত ২০ অক্টোবর ২০১৮ ইং রাজেন্দ্র কলেজের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত হতে পেরে বেশ ভালো লেগেছে। পূরোনো দিনের স্মৃতি, কলেজ পাঠদানের সময় শিক্ষক, সহপাঠিদের কথা, দাদার ক্যান্টিন- সে সময়ের অনেক অনেক স্মৃতি, কথা মনে পড়ছিল। পাশাপাশি কিছু ব্যাপারে হতাশ হয়েছি মনের মধ্যে একটু ধাক্কাও লেগেছে এই ভেবে যে এ আয়োজনটা আরেকটু অন্যভাবে হলেওহতে পারতো। আরও একটু ভিন্ন আঙ্গীকে ব্যাপক পরিসরে বিভিন্ন মতাদর্শের সর্বদলীয় সাবেক শিক্ষার্থী বিগত দিনের কলেজ সংসদের সাবেক ছাত্র নেতৃবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ এদের সমন্বয়ে শতবর্ষ অনুষ্ঠানটি হতে পারতো- হতে পারতো একটি মনোরম স্মরণীকা প্রকাশ, সাবেক প্রতিভাবান জেষ্ঠ্য শিক্ষার্থীদের স্মৃতি চারণ প্রভৃতি। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আরও সতর্ক এবং যতœবান হলে ভালো হতো। দেশ বরেণ্য সঙ্গীত শিল্পিদের পরিবেশনায়সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি মজা করে উপভোগ করেছি। পরিশেষে শতবর্ষ পূর্তি উৎসব কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলী, আয়োজক বৃন্দ, দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল স্তরের কর্মী এবং কর্মকর্তা বৃন্দকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

লেখকঃ মোঃ মুশফিকুর রহমান ঝান্ডা (সাংবাদিক)
প্রাক্তন ছাত্র-সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ ১৯৭৬-৮০
সম্পাদক, সাপ্তাহিক ফরিদপুর বাণী
সিনিয়র সদস্য, ফরিদপর প্রেসক্লাব
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত
ঝিলটুলি ফরিদপুর।
মুঠোফোন ঃ ০১৭৯৭ ০১১৫৪৪

বিঃ দ্রঃ- আমার পিতা সাংবাদিক মুশফিকুর রহমান ঝান্ডা ফেসবুকে অভ্যস্থ নয়, আমার আইডি থেকে লেখাটি পোস্ট করলাম ধন্যবাদ।

 

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *