কোহিনুর পাবলিক লাইব্রেরী

Page Visited: 130
138 Views

১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত কোহিনুর পাবলিক লাইব্রেরী।স্থান টেপাখোলা ফরিদপুর সদর।

ফরিদপুরের হাবিল গোপালপুরের বাসিন্দা মজিদ মিয়া। তিনি ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কোহিনুর পাবলিক লাইব্রেরি। কোহিনুর অর্থ পাহাড়ের আলো। মজিদ মিয়া পাহাড়ে নয়, ফরিদপুর শহরেই জ্ঞানের আলো জ্বালাতে গড়ে তুলেছেন এই গণপাঠাগার।মজিদ মিয়া শুধু কোহিনুর পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেননি, ঘরে ঘরে গিয়ে বইও সংগ্রহ করেছেন লাইব্রেরীর জন্য। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আগে এই গণপাঠাগারে ১০ হাজারের বেশি বই থাকলেও এখন আছে মাত্র ৪ হাজার ২০০।

 

তারুণ্যের স্মৃতি জড়ানো আমার প্রিয় কোহিনুর লাইব্রেরী। দীর্ঘদিন এভাবেই তালাবদ্ধ পড়ে আছে। দুপাশ থেকে অটোরিকশা মেরামতের দোকান, পরোটা ভাজির রেষ্টুরেন্ট দখল করে নিয়েছে লাইব্রেরীর বেশ খানিকটা অংশ ।

এক সময় প্রায় প্রতি বিকেলেই বই বদলে নিতে এখানে হাজির হতাম।

 

স্কুল জীবনেই পরিচয় হয়েছিলো বাংলার রবিনহুড দস্যু বনহুরের সাথে। কিছুদিনের মধ্যেই রোমেনা আফাজকে বিদায় জানিয়ে হাতে নেই কাজী আনোয়ার হোসেনের কুয়াশা ও মাসুদ রানা। বই পড়ার নেশাটা তখন থেকেই শুরু। কোহিনুর পাবলিক লাইব্রেরীর সদস্য হওয়ার পর পেয়ে গেলাম  নীহারঞ্জন গুপ্তের সত্যান্বেষী কিরিটি রায়কে। ধীরেধীরে পরিচয় হলো ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়, নিমাই ভট্টাচার্য, আশাপূর্ণা দেবী, বিমল মিত্র, সমরেশ বসুদের সাথে। এখান থেকে বই নিয়ে বন্ধুরা পাল্লা দিয়ে পড়েছি। একবার বাসা থেকে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ বইটি কে  যেনো চুরি করে নিয়ে গেলো। এক বন্ধু ‘চিতা বহ্নিমান’ বইটি পড়তে নিয়ে আর ফেরতই দিলোনা। এসব কারনে আমাকে মোটা অংকের জরিমানার অর্থ গুনতে হয়েছিলো। ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় পুরুষ না নারী, তাই নিয়ে একদিন তুমুল বিতর্ক বেঁধে গেলো বন্ধুদের মধ্যে। পরে জানা গেলো লেখকের আসল নাম তারাপদ মুখোপাধ্যায়! কতশত স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই ভবনটি ঘিরে।

 

ইচ্ছে ছিলো লাইব্রেরীর ভিতরে ঢুকে একটু ঘুরে দেখার। থরেথরে বই সাজানো পরিচিত আলমিরাগুলো কি এখনো তেমনি আছে? বই পাগল ছেলেরা সব কোথায় হারিয়ে গেলো ! আবারও যদি কোহিনুর লাইব্রেরী চালু হতো!!!!

লেখকঃ জনাব অমিত মনোয়ার

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *